বি এম রাকিব হাসান: করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে খুলনা থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে সব দূরপাল্লার রুটে বাস চলাচল আগামী বুধবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। খুলনা মোটরশ্রমিক ইউনিয়ন ও বাস মালিক শ্রমিক সমিতির যৌথ সিদ্ধান্তে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে খুলনার অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল করবে।
খুলনা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম বেবী বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে খুলনা থেকে ঢাকা, বরিশাল, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দূরপাল্লার সব রুটে বাস চলাচল বুধবার সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল করবে বলে জানান তিনি।
এদিকে খুলনা নগরীতে বিকেল পাঁচটার পর চায়ের দোকান খোলা রাখা যাবে না। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে খুলনা জেলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার ব্যতিত অন্যান্য সাপ্তাহিক হাট ও গরু-ছাগলের হাট বন্ধ থাকবে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত খুলনা জেলা কমিটির সভায় সোমবার এ সিদ্ধান্ত জানানো হয় ।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে সার্কিট হাউজ সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় খুলনা সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ, পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মো. এহসান শাহ, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিসহ জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় খুলনার বিভিন্ন উপজেলা হতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা ডিভিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন এবং করোন ভাইরাস প্রতিরোধে উপজেলা পর্যায়ে গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাব একটি দুর্যোগ তৈরি করায় জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে জরুরি অবস্থার ন্যায় সক্রিয় রাখতে হবে। দাকোপের আংটিহারায় ভারত হতে আগত কিংকারবাহী জাহাজ হতে নাবিকদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে না নামার বিষয়টি কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সরকারের বিশেষ উদ্যোগে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণ কিট ও চিকিৎসকদের নিরাপত্তা উপরকণগুলো উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছাবে। জনসাধারণকে সহজ বাংলায় কোয়ারেন্টিন (সন্দেহভাজনদের পৃথক করে রাখা) বিষয়টি বুঝিয়ে বিদেশফেরতদের হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা হচ্ছে।
কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের প্রয়োজনের সময় চিকিৎসাকেন্দ্রে আনার জন্য আলাদা অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখার বিষয়ে এসময় নির্দেশনা দেওয়া হয়। সরকারি খাদ্য গুদামে ১৭ লাখ মেট্রিক টন ধান ও সাড়ে ৩ লাখ মেট্রিক টন গম মজুদ থাকায় দেশে খাদ্য সংকট হওয়ার সুযোগ নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারদর নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের নজরদারি অব্যাহত থাকবে। সরকারি চাকুরিজীবীদের নিজ কর্মস্থলে অবস্থানের সরকারি নিদের্শনার বিষয়ে সভায় উপস্থিত সবাইকে জানানো হয়।
Leave a Reply