রবিউল হাসান রাজিবঃ ফরিদপুরে গভীর শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও উৎসবমূখর পরিবেশে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। বিজয় দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচির মাধ্যমে পালন করা হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ফরিদপুর পুলিশ লাইনে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের সূচনা হয়।
সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, ব্যক্তিমালিকানাধীন সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
সকাল ৮ টায় গোয়ালচামট মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদগণের স্মৃতিফলকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। প্রথমে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এমপির পক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করেন জেলা প্রশাাসন ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। এরপরে জেলা প্রশাসন, জেলা আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, পুলিশ প্রশাসন, প্রেসক্লাব সহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করেন। শহীদ স্মৃতিফলকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন শেষে সকাল ৯ টায় শেখ জামাল স্টেডিয়াম সংলগ্ন গণকবরে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত শহীদদের গণকবরে ১.০০ মিনিট নিরবতা পালন ও শহীদগণের কবর জিয়ারত করা হয়।
সকাল ৯.৩০ মিনিটে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মুখ চত্তরে জেলা প্রশাসক কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং শত সহস্র কন্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও নিজ নিজ অবস্থান হতে একযোগে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।
এসময় বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান বিজয় দিবসের উদ্ধোধন করেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার।
আরো উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোঃ আলিমুজ্জামান (বিপিএম সেবা), স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দীপক কুমার রায় সহ জেলা আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সকাল ১১ টায় ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের অনলাইনে জুম কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতীয় সমৃদ্ধি অর্জন শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাদ যোহর সকল মসজিদে মাদক,সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও গুজব বিরোধী কার্যক্রমের বিষয়ে জনমত সৃষ্টির জন্য আলোচনা ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে আলোচনা এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আত্মদানকারী যোদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিভিন্ন মসজিদে মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত করা হয়। মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা সহ অন্যান্য উপাসনালয়ে প্রার্থনা করা হয়।
বিকাল ৩ টায় অনলাইনে জুম অ্যাপের মাধ্যমে মহিলাদের অংশগ্রহণে মুক্তযুদ্ধ ভিত্তিক আলোচনা করা হয়। এছাড়া হাসপাতাল, জেলখানা, শান্তিনিবাস, এতিমখানা ও শিশু পরিবারে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।
সন্ধা ৬ টায় অনলাইনে জুম অ্যাপে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সুবিধাজনক সময়ে পুলিশ বাদক দল কর্তৃক বাদ্য পরিবেশন করা হয়।
এছাড়া সকাল থেকে সন্ধা শেখ রাসেল শিশুপার্ক বিনা টিকিটে শিশুদের জন্য শিশুপার্ক উন্মুক্ত রাখা এবং প্রদর্শনীয় ব্যবস্থা রাখা হয়। এদিকে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগ দিনব্যাপি নানা কর্মসূচী পালন করে।
সকাল ৭ টা ১৫ মিনিটে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জাতীয় সংগীতের সাথে জাতীয় পতাকা এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর শহীদের স্মরণে ১. ০০ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে আওয়ামী লীগসহ সকল সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহার সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট শামসুল হক ভোলা মাষ্টার, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শামীম হক, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা আইভি মাসুদ, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ঝর্ণা হাসান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শওকত আলী জাহিদ, শ্রমিক লীগের সভাপতি মোঃ আক্কাছ হোসেন, পৌর মেয়র শেখ মাহতাব আলী মেথু, নব-নির্বাচিত পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অমিতাভ বোস, থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা, থানা যুবলীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান মিজান সহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরে গোয়ালচামট শহীদ স্মৃতিফলকে আওয়ামী লীগসহ সকল সহযোগী সংগঠন শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করে। এরপরে জেলা প্রশাসন কতৃক অংশগ্রহণ করেন নেতৃবৃন্দ। এছাড়া দিবসটি পালন উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচির মাধ্যমে পালন করেছে।
Leave a Reply